নোয়াখালীতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন-বিএডিসি কার্যালয়ে তথ্য চাইতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক। বুধবার দুপুর ১টার দিকে জেলা শহর মাইজদীর নতুন বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন বিএডিসির উপণ্ডপরিচালকের কার্যালয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার গণমাধ্যমকর্মীরা হচ্ছেন, দৈনিক বাংলার জেলা প্রতিনিধি মাহাবুবুর রহমান বাবু ও দেশ টিভির জেলা প্রতিনিধি মাওলা রকিবুল আহসান সুজন। এ সময় আহত হন দৈনিক বাংলার জেলা প্রতিনিধি মাহাবুবুর রহমান।
মাহাবুবুর রহমান বাবু জানান, বিএডিসির নিয়মিত-অনিয়মিত শ্রমিক, নারিকেল গাছ সংগ্রহের কৃষক ও বিক্রয় তালিকার জন্য তথ্য অধিকার ফরমে আবেদন করা হয়। আবেদনটি নিয়ে বিএডিসি উপণ্ডপরিচালক (বীজ বিপনন) এর জেলা কার্যালয়ে তিনি ও দেশ টিভির জেলা প্রতিনিধি মাওলা রকিবুল আহসান সুজনসহ স্বশরীরে যান। সেখানে উপণ্ডপরিচালক নুরুল আলম এর সঙ্গে তার কক্ষে কথা বলছিলেন তারা। হঠাৎ ওই প্রতিষ্ঠানের স্টোর কিপার মিরাজ হোসেন শান্ত কক্ষে প্রবেশ করে দুই সাংবাদিকের ভিডিও করতে শুরু করেন এবং তারা চাঁদা নিতে আসছে এমন বলে চেঁচাতে থাকেন। পরে মাওলা রকিবুল আহসান সুজন শান্ত এর হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে নেন। একপর্যায়ে শান্ত মাহবুবুর রহমানকে কিল-ঘুষি দেন এবং রুম থেকে বের হয়ে লাঠি নিয়ে আসতে যান। পরে সাংবাদিক সুজন দরজা বন্ধ করে দেন।
মাওলা সুজন জানান, কার্যালয়ের প্রধানের সামনে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে এমন আচরণ করবে তা মেনে নেওয়া যায় না। তবে উপণ্ডপরিচালক এ সময় শান্তকে নিভৃত করার চেষ্টা করেন এবং তাৎক্ষণিক তাদের (গণমাধ্যমকর্মী) দুই জনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মিরাজ হোসেন শান্ত অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো দাবী করেন, সাংবাদিক মাহাবুবুর রহমান বাবু ও মাওলা সুজন তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। এবং তার মোবাইলটি কেড়ে নেন। বিষয়টি তিনি সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসক ও সুধারাম মডেল থানায় অবহিত করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএডিসি জেলা কার্যালয়ের উপণ্ডপরিচালক (বীজ বিপনন) নুরুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি ঘটনায় লজ্জা প্রকাশ করে বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের গায়ে হাত দেওয়া হয়নি। তবে সেখানে ভিডিও করাকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। ঘটনাটি নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং গণমাধ্যমকর্মীরাসহ বসে সমাধান করা হবে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান। তবে এ ঘটনায় কোনো সংবাদ পরিবেশন না করার জন্য অনুরোধ জানান এ কর্মকর্তা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিরাজ হোসেন শান্ত লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার চরজাঙ্গলিয়া গ্রামের শাহজাহানের ছেলে। তিনি কমলনগর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ১৫ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।